অসুখ করলে গলার স্বর বদলে যায়। সারাদিনের কাজের ফাঁকে তবুও লুকিয়ে রাখা গেলেও, খুব সকালে সেই গলা বেশ বোঝা যায়। অনেক রাতে একটু একটু করে শরীর সেরে ওঠে তখন, গলায় আদুরে অভিমান জমতে থাকে। মায়ের জন্য অভিমান, সম্পর্কের মানুষটার জন্য অভিমান। অসুখ হলে মানুষ সবার আগে নিজের মা, বাবা অথবা সম্পর্কের মানুষ কে খোঁজে। সব তো বদলে যাবে, এরা বদলায় না। সম্পর্ক অনেক জায়গায় ভাঙতে দেখি, বদলে যেতে দেখি গলার স্বর। তবুও আদুরে অভিযোগ গুলো সবসময় থাকবে, থাকবে অপেক্ষা ও। ওরা চুপ করে চেয়ে থাকে চোখের দিকে, গলা শুনে শরীরের ভিতরের অবস্থা বুঝে নিতে চেষ্টা করে। বুকের উপর হাত রেখে উত্তাপ বুঝে নিতে চেষ্টা করে। কেউ কেউ পারে, কেউ কেউ পারে না। সবাই ঠিক বুঝতে পারে না বলেই ওপাড়ের মানুষটা অনেক দূরে দাঁড়িয়ে থাকে। সম্পর্কে থাকার সময় অসুখ ও থাকে। তখন অসুখ বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করতেও হবে। সম্পর্ক বাঁচে সমর্পনে। তা না হলে অসুখে। মনখারাপ হলে সবাই এতোটাও আমল দেয় না। কিন্তু অসুখ হলে দেয়। খুব মন দেয়। বুকের উপর কান পেতে হৃৎপিণ্ডের শব্দ বুঝতে চেষ্টা করে। আচ্ছা, সবাই কি ডাক্তার? সবাই বুকের শব্দ শুনে মানুষের অসুখ বুঝতে পারে?
না, সেটা নয়। নিজের মানুষটার অসুখ সবাই বোঝে। একবার শরীরে শরীর মিললে, শরীরের তরঙ্গ গুলোও কিছু কিছু এক হয়ে যায়। সম কম্পাঙ্কের তরঙ্গ একসাথে মিললেই আশ্চর্য কান্ড ঘটে। চট করে বুঝে নেওয়া যায় তখন। সব মানুষ সম্পর্ক বোঝে, বুঝতে চেষ্টা ও করে। ওই তরঙ্গের কম্পাঙ্ক টা মিলে যাওয়া জরুরি। নইলে সারা জীবনেও বোঝা হয় না। অসুখের সময় মানুষ নিজের অভিমান, রাগ লুকিয়ে রাখতে পারে না। আর পারে না বলেই তাকে বুঝে নেওয়া তখন খুব সহজ। সবসময় বলব, অসুখে তার কাছে থাকুন। হাতের উপর হাত রেখে শান্ত হয়েই বসুন। বুকে কান পাতুন, হাত দিয়ে উত্তাপ ও দেখুন। কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে চোখের দিকে চেয়ে থাকুন। জলের আঘাতে শতাব্দীপ্রাচীন শিলাখন্ড ও ভাঙতে থাকে। আপনার উপস্থিতি যত নিয়মিত, তত মানুষটা আরো কাছে আসে। চিনতে হবে সবটা জীবন ধরে। হাল ছাড়লে চলে না। একবার ছুঁয়ে দিলে কারো চোখে জল আসে যদি, জানবেন সে আপনাকে বড় কাছের মানুষ মনে করেন। সেই মনের ভাবটা ভাঙবেন না কখনোই। মানুষ ভীষণ কঠিন। খুব সহজে মনের ভিতর জায়গা হয় না। জায়গা হলে গেলে তার কদর করুন। আমি জানি, আপনি নিশ্চয়ই পারেন। সবটা খুব ভালো হবে একদিন।❤️🥀🌼
No comments:
Post a Comment