লিখেছেনঃ অভ্র তুষার
(১)
ছেলেটির নাম ‘নীলাদ্রী’;চট্টগ্রামের একটি বিখ্যাত
কলেজে I.Sc-2
Nd ইয়ারে পড়ছে।নীলাদ্রী যখন class-6 এ পড়ত তখন
ওর বাবা
মারা যান।বাবা মারা যাওয়ার পর ওর মা ওকে খুব কষ্টে মানুষ
করেন।নীলাদ্রী মা-এর কষ্টের মান রেখেছে।
school-এ 1st ছাড়া 2nd হতে ওকে কেউ কখন-ও
দেখেনি।SSC তে Golden A+ পেয়েছে এবং Board-এর
সেরা দশ জন ছাত্রের তালিকায় ওর নাম আছে।নীলাদ্রী
কখনও কারও সাথে ঝগড়া বা মারামারি করেছে এমনটা কেউ
কখনও শোনেনি।
তো এই ঘটনা সেই সময় কার যখন নীলাদ্রী একটি নতুন
airtel sim কিনল।যেহেতু নতুন sim তাই ২-১ জন বন্ধু ছাড়া
তেমন কেউ ওর এই number টা জানত না।ঐদিন সকালে ওর
এক বান্ধবি ‘চৈতী’র note খাতা ফেরত দেয়ার কথা ছিল।কিন্তু
ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়ায়,ফিজিক্স ব্যাচ-এ দেরি
হয়ে যাচ্ছিল বলে,নীলদ্রী এক প্রকার ছুটতে ছুটতেই
ব্যাচে গেল ‘চৈতী’র খাতা না নিয়েই।কথা ছিল চৈতী college
gate-এ wait করবে ওর জন্য;হয়ত করছিল-ও,কিন্তু
নীলাদ্রী অনেকটা লুকিয়ে বাসায় চলে এল।আর কারন?খাতা
তো ও’ সাথে করে নিয়ে যেতেই ভুলে গেছে।
YesterdayOvro Tushar
(২)
এর প্রায় দেড় ঘন্টা পরের কথা……………….নীলদ্রীর
mobile-এ একটা missed call এল।নীলাদ্রী ভাবলো,‘‘নিশ্চই
চৈতী দিয়েছে”(চোরের মন পুলিশ পুলিশ আর কি)।ও’
মনে মনে ভাবল,‘‘নাহ!বেচারীকে একটা call দিয়ে একটা
‘সরি’ অন্তত বলে নেওয়া উচিত।কতক্ষন অপেক্ষা
করেছে একা একা কে জানে?”যেই ভাবা সেই
কাজ………..ও’ call দিল।ও’পাশ থেকে একটা মেয়ে call
receive করতেই নীলাদ্রী ওর দোষ কবুল করা শুরু করল।
কিন্তু অপর পাশের মেয়েটি তাকে অবাক করে দিল।সে
নীলাদ্রী’কে রাগারাগি করার পরিবর্তে কিছু হাস্যকর প্রশ্ন
করা শুরু করল।কিছুক্ষন কথা বলার পর নীলাদ্রীর কেমন
যেন সন্দেহ হল।ও’ সরাসরি জানতে চাইল,‘‘কে কথা
বলছেন?”তখন অপর পাশের মেয়েটি ও’কে খুব পরিচিত
জনের মতই বলল,‘‘ইমমমমা!তুমি আমায় চিনতে পারছ
না?”নীলাদ্রীর সন্দেহটা আরও বেড়ে গেল।এরপর
শেষ পর্যন্ত নীলাদ্রী যা জানতে পারল তা হলঃমেয়েটিও
আসলে নীলাদ্রীকে চেনে না।ওরা কয়েক বান্ধবী
মিলে নিজের number-এর শেষ digit টা change করে
unknown number-এ missed call দিচ্ছিল মজা করবার জন্য।
নীলদ্রী number টা mobile-এ save করে রাখল ‘unknown
number’ নাম-এ।ঠিক ঐদিন বিকালেই আরও একটা missed call
এল ঠিক ঐ number থেকেই।নতুন sim,airtel sim
কোম্পানীর কল্যানে mobile-এ তখনও কিছু free minute
অবশিষ্ট ছিল।নীলাদ্রী ভাবল,‘‘দোষ কোথায় এই অপরিচিত
বন্ধুটিকে চিনে নিতে যখন সে নিজেই আগ্রহ
দেখাচ্ছে?”নীলাদ্রী call দিল number টা’তে।কিন্তু অপর
পাশ থেকে যে কণ্ঠটি ভেসে এল কে সে?এই কণ্ঠ
তো নীলাদ্রীর চেনা নয়।এত মিষ্টি আর মোহনীয়
কণ্ঠস্বর নীলাদ্রী আগে কখনও শোনেনি।ও যেন
নিজের কান কেই বিশ্বাস করতে পারছিল না।ওর মনে হচ্ছিল
এটা স্বপ্ন নয় তো?নিজের গায়ে চিমটি কেটে ব্যাথা
পেতেই বুঝতে পারল যে,এ মায়াবী কণ্ঠস্বর স্বপ্নে
নয়,ও’ বাস্তবেই শুনছে।নীলাদ্রী তখন সরাসরি জানত চাইল
যে মেয়েটি ও’কে missed
Call কেন দিয়েছিল?কিন্তু মেয়েটি ও’কে অবাক করে
দিয়ে জানাল যে,সে নীলাদ্রী’কে কোন missed call
দেয়নি,হয়ত তার ছোট ভাই-বোন কেউ দিয়েছে।
মেয়েটি আরও জানাল যে,সে নীলাদ্রী’কে চিনতে
পারছে না।তখন নীলাদ্রী মেয়েটিকে দুপুরের সব ঘটনা
খুলে বল্ল।সব শুনে মেয়েটি যা জানাল,তার মর্মার্থ
হলঃদুপুরে নীলাদ্রীর সাথে যে কথা বলেছে সে
ও’(মেয়েটি) নয়,ওর এক বান্ধবী ছিল।ওর বান্ধবী
মেয়েটির number থেকেই নীলাদ্রী’কে missed call
দিয়েছিল।কিন্তু ওর বান্ধবীরা ও’কে নীলাদ্রীর কথা
বলেছে।আর এখন তো নীলাদ্রীর সাথে সরাসরিই কথা
হল।নীলাদ্রী আরও বেশ কিছুক্ষন কথা বলল মেয়েটির
সাথে।মেয়েটিও কথা বলল কারন তার দুষ্টু বান্ধবিদের
কল্যাণে নীলাদ্রী যে আর অচেনা কেউ ছিল না,হয়ে
গেছিল পরিচিত একজন।আর কারণটা?কারণটা আর কি-বা
হবে……………নীলাদ্রী নামের এই অচেনা ছেলেটিকে
যে ওদের মনে ধরে ছিল।নীলাদ্রী আর ঐ অসম্ভব
সুন্দর কণ্ঠের অধিকারিণী মেয়েটি বেশ কিছুক্ষন কথা
বলেছিল।রাতে ঘুমাবার সময় নীলাদ্রী মেয়েটার কথা
ভাবতে লাগলো……………
(৩)
মেয়েটির নাম ‘সেমন্তি’।নীলাদ্রীকে অবাক করে
দিয়ে সেমন্তি জানিয়েছিল যে,সে’ও নীলাদ্রীর
শহরেই থাকে।শুধু এটাই নয়,নীলাদ্রীর জন্য তখনও আরও
চমক অপেক্ষা করছিল।আর তা হল….সেমন্তি নীলাদ্রীর-ই
college-এ I.Sc-1st ইয়ারে পড়ছে।এরপর প্রায়ই ওদের
ফোনে কথা হত।কিন্তু মেয়েটি চাইলে তবেই
শুধুমাত্র,কারণ সেমন্তি যে number টা দিয়ে কথা বলত সেটা
ও’ বন্ধ রাখত।যখন মন চাইত শুধু তখন-ই আবার চালু করে
নীলাদ্রীর সাথে কথা বলত।সেমন্তির যে number টা সব
সময় খোলা থাকতো,সেটা ও’ নীলাদ্রী’কে দেয়নি।
আর নীলাদ্রীও কখনও জানতে চায়নি।অচিরেই ওরা খুব ভাল
বন্ধু হয়ে উঠল।সেমন্তি নীলাদ্রীকে জানিয়েছিল
যে,সেমন্তি খুবই রক্ষনশীল একটি পরিবারের মেয়ে।
college-এ ও’ কখনও কোন ছেলের সাথে কথা বলেনি।
এমনকি ওর নিজের কোন facebook account পর্যন্ত তাই
নেই।কিন্তু তবুও ওর ২টা ছেলে বন্ধু জুটে গেল,যাদের
দু’জন কেই ওর খুব ভাল লাগে।তাদের একজন তো
নীলাদ্রী নিজেই,আর অপর জনের নাম ‘ধ্রুব। ধ্রুব নাকি
আবার নীলাদ্রীর সাথেই একই section-এ পড়ে।তবে
ধ্রুবই নাকি সেমন্তি’কে প্রথম ফোন করে,আর তারপর
থেকেই ওদের বন্ধুত্ব।কিন্তু ধ্রুব সেমন্তির mobile
number টা কোথা থেকে পেয়েছিল সেটা সেমন্তির
অজানাই ছিল।
(৪)
এরপর প্রায় এক মাস কেটে গেল সেমন্তির সাথে
কোন কথা হয়নি নীলাদ্রীর।নীলাদ্রী বহুবার call
দিয়েছে ও’র number-এ,কিন্তু ফোন কোম্পানী’র
যণ্ত্রারূঢ় কণ্ঠ প্রতিবার-ই নিষ্ঠুরের মত ঘোষনা দিয়েছে
যে,সেমন্তির number টি বন্ধ আছে।নীলাদ্রীর খারাপ
লাগলেও ও’র কিছুই করার ছিল না।নীলাদ্রীর কেন খারাপ
লাগত সেটার ব্যাখ্যা ও’র কাছে অজানাই ছিল।ওরা তো শুধুই
বন্ধু ছিল,তাইনা?কিন্তু সত্যিই কি তাই ছিল ওরা?এর থেকে এক
বিন্দু-ও কি বেশি মনে হয়নি নীলাদ্রীর কাছে
সেমন্তি’কে?এই প্রশ্ন নীলাদ্রী কখনও তার মন কে
করেনি,আর করবেও না।কারণ সে জানে বন্ধুত্বের
কিভাবে মূল্যায়ণ করতে হয়।কিন্তু তবুও কেন এক অজানা
ব্যাথা,প্রিয় একজনকে হারানোর সংশয় বরংবার আন্দলিত
করেছে নীলাদ্রীর শান্ত হৃদয়কে?কিন্তু নীলাদ্রীর
জানা নেই কি এর কারণ? কোথায়-ই বা আছে এর সমাধান?
সেমন্তির যে জিনিষটা নীলাদ্রীর সব থেকে বেশি ভাল
লাগত তা হল সেমন্তির মিষ্টি হাসি।নীলাদ্রী ওর সাথে কথা
বলার সময় মনে হয় সেমন্তি কথার থেকে হয়ত
হেসেছেই বেশি।আর নীলাদ্রীর যে জিনিষটা সেমন্তি
সবথেকে বেশি ভালবাসত তা হল নীলাদ্রীর গান।খুব সুন্দর
গানের গলা ছিল নীলাদ্রীর।সেমন্তি তো
নীলাদ্রীকে বহুবার অনুরোধ পর্যন্ত করেছে ‘close-
up one’-এর competition-এ অংশ নিতে।কিন্তু আজ সেই
প্রতিযোগিতার সময় কাছে চলে আসলেও সেই কাছের
মানুষটাই যে আর কাছে নেই।একটা প্রশ্ন বার বার
নীলাদ্রীর মনে বাজতে থাকে আর তা হল,আমি যেমন
ও’কে miss করি,সেমন্তি-ও কি আমায় তেমন miss করে?
দুরত্ব হয়ত ভালবাসা বা বন্ধুত্বকে আরও গভীর করে,কিন্তু
এই দুরত্ব নীলাদ্রীকে এ কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তার
উত্তর নীলাদ্রীর জানা নেই।
(৫)
এরপর হঠাৎ একদিন………………নীলদ্রীর মোবাইল-এ একটা
missed call এল সেই বহু প্রতিক্ষিত number টা থেকে।
number টা তখনও ‘unknown friend’ নামেই save করা ছিল
নীলাদ্রীর mobile-এ।নীলদ্রী তখন ‘ফিজিক্স practical
class’-এ ছিল।কোন রকমে একটা sms করে জানাল যে
class থেকে বের হয়েই call back করবে।নীলাদ্রী
কোন রকমে practical class করছিল।স্যার-এর নির্দেশ মত
চোখটা হয়ত তড়িৎ প্রবাহ মাপার যন্ত্র ‘অ্যামিটার’-এর দিকেই
ছিল কিন্তু মনটা হয়ত পড়েছিল অন্য কোথাও,অন্য কার
কাছে।class থেকে কোন রকমে বের হয়েই
নীলাদ্রী call দিল সীমন্তি’র number-এ…..অনেক কথা
জমে আছে।বহু দিন পর আবার সেই প্রিয় মানুষটার সাথে
কথা বলতে পেরে কী যে ভাল লাগছিল সেটা হয়ত
নীলাদ্রী ছাড়া আর কেউ উপলব্ধি করতে পারবে না।
নীলাদ্রী তখন সেমন্তির সাথে দেখা করতে চাইল,কারন
ও’ ঠিক করে ফেলেছে mobile তা আপাতত আর ব্যাবহার
করবে না,কারণ সামনেই HSC পরীক্ষা।সেমন্তি-ও খুশীর
সাথে দেখা করতে রাজী হল।ওরা ঠিক করল college
campus-এ দেখা হবে।কিন্তু বিপত্তি হল,সেমন্তি college-এ
কোন ছেলের সাথে কথা বলেছে-এটা ওর বান্ধবিরা
কেউ দেখে ফেললে সেমন্তির সমস্যা হতে পারে।
তখন নীলাদ্রী অনেক ভেবে একটা plan বের করল
আর সেমন্তি’কে সেটা জানাল।plan টা এমন ছিল
যে,‘নীলাদ্রী যেন বাইরের কোন শহরের অন্য
কোন college থেকে transfer হয়ে এই college-এ নতুন
এসেছে,তাই নিজের class খুজে পাচ্ছে না(1st ইয়ার এর
students,2nd ইয়ার এর student দের তেমন চেনে না)।
আগে থেকে ফোনের মাধ্যমে ওরা জেনে নেবে
কে কোন রং-এর dress পরে আসছে।ফলে ওরা একে
অপরকে দেখলেই চিনতে পারবে।তখন নীলাদ্রী ঐ
মিথ্যা কথাগুলো বলে একটু ছোট-খাট নাটক করে
সেমন্তির কাছে জানতে চাইবে class room টা কোথায়?
আর এর মাধ্যমে ওদের দেখা আর কথা বলা টাও হয়ে
যাবে।পরে সেমন্তির বান্ধবী্রা যদি ও’কে কিছু জিগ্যেস
করে তো সেমন্তি সোজাসুজি বলে দেবে,আমি কী
জানি এই নতুন ছেলেটা আমাকেই কেন প্রশ্ন করল?
সেমন্তির-ও plan টা বেশ পছন্দ হল।ঐদিন নীলাদ্রী
অনেক সময় ধরে গান শোনাল সেমন্তি’কে।আর
সেমন্তি-ও খুব হেসেছিল।কথার মাঝে সেমন্তি
নীলাদ্রীর Facebook Id টা জানতে চাইল কারণ সেমন্তিও
নাকি খুব শীঘ্রই একটা Facebook Account খুলবে।
নীলাদ্রী শুধু বলেছিল যে কথা শেষ হলেই text করে
জানিয়ে দেবে।কিন্তু একটানা 23 minutes কথা বলার পরও
যখন কথা আর ফুরায় না তখন মোবাইল-এর balance কিন্তু
গেল ফুরিয়ে।একটা অর্ধ-সমাপ্ত কথা বলতে গিয়ে শুধু
মুখেই রয়ে গেল,বলা হল না আর…………..
(৬)
পরদিন সকাল,তারিখটা ছিল সম্ভবত ‘১০ই অক্টোবর’,২০১২-
বুধবার।নীলাদ্রীর জীবণের খুবই special একটা দিন।খুব
স্বাভাবিক ভাবেই সকাল থেকেই খুব উচ্ছসিত ছিল তাই
নীলাদ্রী।আগের দিন তো খুশীর চোটে ‘কাল কিছু
হতে চলেছে’ এই টাইপের একটা status পর্যন্ত post
করে ফেলল Facebook-এ।ওর বন্ধু আতিক তো ও’কে
প্রশ্ন করেই শ
Friday, November 27, 2015
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
For HUAWEI Watch Pro GPS NFC Smart Watch Men 360*360 AMOLED Screen Heart rate Bluetooth Call IP68 Waterproof Man Smartwatch 2025
Specifications Hign-concerned Chemical None Battery Life 3Day Voice assistant built-in YES Bluetooth-compatible Version 5.3 Metrics measur...

-
তোমাকে ছাড়া হয়তো বেঁচে থাকতে পারবো, ,,,, কিন্তু , কখনো সুখে থাকতে পারবো না,। ভেবো না, তাই বলে তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ,,,,,,,,,,,,,,...
-
আজ সত্যিই আমি অপরিচিত নিজের কাছে হারিয়ে ফেলেছি আমি, আমার আমি কে ছোট্ট কিছু স্বপ্ন ছিল বাস্ততা স্বপ্ন গুলো কে বদলে দিল আজ কষ্ট হচ্ছে না...
No comments:
Post a Comment